
আগরতলা, ১৩ জুন:
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য মন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা শুক্রবার আগরতলায় এক বেসরকারি হাসপাতালে নতুন ক্যানসার চিকিৎসা কেন্দ্র উদ্বোধনের সময় রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় বড়সড় সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, রাজধানী আগরতলায় একটি নতুন আঞ্চলিক তৃতীয় স্তরের চোখের হাসপাতাল এবং একটি ২০০ শয্যার মা ও শিশু হাসপাতাল নির্মিত হতে চলেছে, যা রাজ্যবাসীর চিকিৎসার জন্য বাইরের রাজ্যে যাওয়ার প্রয়োজন অনেকটাই কমিয়ে দেবে।
ডাঃ সাহা, যিনি নিজে একজন খ্যাতনামা ম্যাক্সিলোফেশিয়াল সার্জন, বলেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর দেখি আগরতলা মেডিকেল কলেজ (AGMC)-এ রোগীরা শয্যা না পেয়ে মেঝেতে শুয়ে রয়েছে। সেই সময় AGMC-তে ছিল মাত্র ৭২৭টি বেড, যা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১,৪১৩-তে। আরও ১০০ বেড দ্রুত যুক্ত করা হচ্ছে।”প্রধানমন্ত্রী-ডিভাইন (PM-DevINE) প্রকল্পে প্রায় ₹১৯২ কোটি টাকার বাজেটে ২০০ শয্যার মা-শিশু হাসপাতাল নির্মিত হবে। সেই সঙ্গে একটি আঞ্চলিক তৃতীয় স্তরের চোখের হাসপাতালও গড়ে উঠবে, যা ত্রিপুরার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ‘গেম চেঞ্জার’ হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী আশাবাদী।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে রাজ্যের আটটি জেলার মধ্যে ছয়টিতে ট্রমা কেয়ার সেন্টার গড়ে উঠেছে এবং বাকি দুই জেলায়ও শীঘ্রই এই পরিষেবা শুরু হবে।

ডাঃ সাহা বলেন, তাঁর নেতৃত্বে রাজ্যে ইতিমধ্যেই একাধিক স্বাস্থ্য-সাফল্য অর্জিত হয়েছে—যার মধ্যে রয়েছে মাত্র সাত মাসে রাজ্যের প্রথম ডেন্টাল কলেজ স্থাপন এবং একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ চালু করা। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য হল রাজ্যবাসীর পাশাপাশি প্রতিবেশী বাংলাদেশ থেকেও রোগীরা এখানে এসে চিকিৎসা করাতে পারেন—এমন এক স্বাস্থ্য পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা।”
মুখ্যমন্ত্রী জানান, বর্তমানে রাজ্যে ৪০০টি এমবিবিএস ও ৬৩টি ডেন্টাল সিট রয়েছে। নতুন একটি ডেন্টাল কলেজ ভবন নির্মাণের জন্য DoNER মন্ত্রক ₹২০২ কোটি বরাদ্দ করেছে, যার ফলে ডেন্টাল সিট সংখ্যা বেড়ে হবে ১০০।এছাড়া তিনি জানান, এখন ত্রিপুরায় নিউরোলজি, নেফ্রোলজি, প্লাস্টিক সার্জারি, কার্ডিওথোরাসিক সার্জারি (CTBS), কিডনি প্রতিস্থাপন-এর মতো উন্নত চিকিৎসা পরিষেবাও চালু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর জন আরোগ্য যোজনার অধীনে ইতিমধ্যেই ₹২৩৯.৬২ কোটি টাকার স্যাটেলমেন্ট হয়েছে।
স্বাস্থ্য পরিষেবার গুণগত মান উন্নত করতে সম্প্রতি AIIMS-এর চার সদস্যের একটি দল, যাদের নেতৃত্বে ছিলেন AIIMS ডিরেক্টর, ত্রিপুরা সফর করেছেন এবং হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ও পরিষেবা বিতরণে সুপারিশ করেছেন।এই সব উদ্যোগের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা-র নেতৃত্বে ত্রিপুরা পূর্বোত্তর ভারতের এক আধুনিক ও নাগালের মধ্যে থাকা স্বাস্থ্যকেন্দ্র হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।
Leave a Reply